ইংল্যান্ডের শুভ সূচনা! অতি আত্মবিশ্বাসই কাল হল ওয়েষ্টইন্ডিজের

ইংল্যান্ডের শুভ সূচনা! অতি আত্মবিশ্বাসই কাল হল ওয়েষ্টইন্ডিজের

বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বিধ্বস্ত হল টি২০ ফর্ম্যাটের বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে লজ্জাজনকভাবে হারল উইন্ডিজ। অনেকটা অসহায় আত্মসমর্পনের মতই হার মেনে নিল তারা।

টসে জিতে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক এউইন মরগ্যান ওয়েষ্টইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। শারজার আদর্শ ব্যাটিং ট্র‍্যাকে মনে হয়েছিল রানের ফুলঝুরি ছুটবে। উইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপও অনেক সমীহ জাগানিয়া। প্রতিটি পজিশনের যারা নামেন তারা অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বসেরা।

ব্যাটিংলাইন আপের ৮জনই বিশ্বের সেরাটি২০ ফ্র্যান্চাইজিগুলোর নিয়মিত সদস্য। এভিন লুইস, লেন্ডলসিমন্স, ক্রিস গেইল, শিমরন হেটমায়ার, ডোয়াইন ব্রাভো, নিকোলাস পুরান, কাইরেন পাওয়েল, আন্দ্রে রাসেল। এরা প্রত্যেকেই পাওয়ারহিটার। ছক্কা মারতে তাদের ঝুড়ি নেই। বিশ্বেরসেরা বোলাররাও অনেক সময় লাইনলেংথ হারিয়ে ফেলেনতাদের সামনে পড়ে। 

এই ব্যাটিং লাইনের অর্ধেক সদস্যও যদি নৈপুণ্যে ঝলসে উঠেন তাহলে যেকোন দুইশ; বেশিরান তোলাটা কোন ব্যাপারই না।প্রতিপক্ষ দলও তাদের আটকানোর জন্য নিশ্চয়ই অনেক বিশ্লেষণ করে থাকবে তাদের মোকাবেলার আগে।

 

যেমনটি করেছে ইংল্যান্ড। টসে জিতে এরকম শক্তিশালী একটি ব্যাটিং লাইনআপকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানানো অনেক বড় ঝুকির ব্যাপার। তাছাড়া দলে নেই তাদের দুই সেরা খেলোয়াড় বেনষ্টোক এবং জফরা আর্চার।তবুও মরগ্যান সাহস নিতে পিছপা হলেন না।

কিন্তুমাঠে দেখা গেল সম্পূর্ণভিন্ন এক চিত্র। ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি এতটা ব্যাপক ছিলযে উইন্ডিজ উড়ে গেল একফুৎকারে। অলরাউন্ডার মইন আলীর হাতেই কুপোকাৎ হলেন প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা। ওকসের বলে দ্বিতীয় ওভারেই নিলেন দৃষ্টিনন্দন এক ক্যাচ। উইন্ডিজের একমাত্র ছক্কা হাকানো ব্যাটার এভিন লুইসকে ফেরত পাঠালেন প্যাভিলিয়নে।

পরেরওভারে বল করতে এসেই মইন দিলেন আরেক ধাক্কা। লেন্ডল সিমন্সকে তুলেন নিলেন। উইন্ডিজের রান তখন মাত্র ৯। এরপরে যখন হেটমায়ারের উইকেটও পেলেন মইন, স্কোরবোর্ডে তখনমাত্র ২৭/৩। ওয়েষ্টইন্ডিজের ব্যাটাররা সেই যে ছন্দ হারালেন, আর ফিরে পেলেননা।

আরও পড়ুন:পাকিস্থানের জয়রথ থামিয়ে ফাইনালে অষ্ট্রেলিয়া

ওয়েষ্টইন্ডিজের হয়ে ক্রিজে অবশ্য জমে গিয়েছিলেন ক্রিসগেইল ।১৩ বলে করেছিলেন সমানসংখ্যক রান। এর মধ্যেতিন চার। কিন্তু কাইলমাইলস তাকে ফিরিয়ে দিলেউইন্ডিজ পরিণত হয় ৩১/৪।এতগুলো উইকেট পড়ার পরও একটুদেখেশুনে খেলার প্রয়োজন মনে করেন ওয়েষ্টইন্ডিজের ব্যাটাররা। 

নিকোলাসপুরান, ডোয়াইন ব্রাভো রানের খাতা সিংগেল কলামেরেখেই বিদায় নেন। আইপিএল মুম্বাইইন্ডিয়ানসের হয়ে এরকম পরিস্থিতিতেদাঁড়িয়ে যান কাইরেন পাওয়েল।কিছুদিন আগেই টিটুয়েন্টিফরম্যাটে দশ হাজারী ক্লাবেরসদস্য হয়েছেন। কিন্তু এখানে নিজের দেশের হয়ে খেলায় একটুমনোযোগ দিয়ে যখন খেলারকথা সেখানে প্রতিপক্ষ দলের সেরা লেগস্পিনার আদিল রশিদকে আয়েশীভঙ্গিতে তুলে মারতে গিয়েবাউন্ডারী লাইনে ধরা পড়েন।

কাইরেন পাওয়েলকে আউট করে আদিল ও যেন সিংহ দূয়ারের চাবি পেয়ে যান।টিটুয়েন্টি ফরম্যাটের সেরা বোলিং ফিগারঅর্জন করে নেন নিজেরনামে। ওভারে মাত্র রান দিয়ে নেন চারটি উইকেট। ফলে এমন বাঘা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও উইন্ডিজ অল আুউট হয়ে যায় মাত্র৫৫ রানে। টি২০ ফরম্যাটে বিশ্বকাপে যা দ্বিতীয় দলীয়স র্বনিম্ন টোটাল। 

আজকাল দশওভারের ক্রিকেটেও ৫৬ রানের টার্গেট এমন কিছু না। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার দেখেশুনে খেলতে শুরু করেন। দলীয় ২১ রানে জেসন রয় ব্যাক্তিগত ১০ রানে ফিরেন আউট হয়। এরপর ছোটখাটো একটি মড়ক লাগে ইংল্যান্ড ইনিংসেও। বেয়ারষ্টো, মইন আলী এবংলিভিংস্টন আউট হয়ে যানঅল্প রানেই। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের ষ্পিনার আকিল হোসেন এরমধ্যে তুলে নেন ২টিউইকেট।

তবেওপেনার জস বাটলার আর অধিনায়ক এউইন মরগ্যান জয়ের সমীকরন মিলিয়েই ফিরেন প্যাভিলিয়নে। বাটলার শেষ পর্যন্ত করেন ২৪ রান ২২ বলে।৩টি চার দিয়ে সাজানএই ইনিংস। মরগ্যান অপরাজিত ছিলেন ৭রানে।

ওয়েষ্টইন্ডিজ শক্তিশালী দল হলেও বেশিরভাগ খেলোয়াড়রা ফর্মে নেই। আর তাদের মধ্যে আছে কিছুটা আত্মম্ভরিতা। প্রত্যেকেই মুই কী হনুরে! এজন্য আটজন সেরা ব্যাটসম্যান নিয়েও তুলতে পেরেছে মাত্র ৫৫ রান। দলের মধ্যে দৃশ্যমান প্রকট সংহতির অভাব। একারনেই মাঠে এমন ভগ্নদশা হয়েছে তাদের।

Related posts

Leave a Comment