ওমানের বিরুদ্ধে মান বাঁচল বাংলাদেশের

ওমানের বিরুদ্ধে মান বাঁচল বাংলাদেশের

ওমানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একটি শক্ত বাঁধা পেরিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ওমানে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে কোনমতে ২৬ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।এই জয়ে বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার আশা কিছুটা জটিল সমীকরনে পড়লেও এখনও বেঁচে আছে টাইগারদের।

আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের কারনে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক মশকরায়লিপ্ত হয়েছে ভিনদেশী ক্রিকেট সমর্থকরা। সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের বন্যায় ভাসিয়েছেন বাংলাদেশকে। ওমানের বিরুদ্ধে পরাজয় হলে বিশ্বকাপ থেকে পত্রপাঠ বিদায় নিতে হত টাইগার বাহিনীকে। তাই অতি গুরুত্বপূর্ণএই জয়ে মান বেচেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের। একই সাথে দলের খেলোয়াড়রাও ফিরে পাবেন আত্মবিশ্বাস।

নাইমেরঅর্ধশতক

উদ্বোধনী ব্যাটার মোহাম্মদ নাইম আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুযোগ পাননি। এই নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। তাকে গত ম্যাচে না খেলানোটা যে বড় ভুলছিল সেটা ওমানের বিরুদ্ধে আজ প্রমাণ করে দিলেন নাইম।

আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও শুরুতে ইউইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার লিটন দাশ আবারো সুপার ফ্লপ। ৬ রান করে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। ওয়ানডাউনে প্রোমোশন পেয়ে আসা মেহদীও ব্যার্থ হয়েছেন এ যাত্রায় ডাক মেরে।

২১ রানে নেইদ লের দুই উইকেট। এই অবস্থায় সাকিবের সাথে জুটি বেধে সুন্দর একটি ইনিংস খেলেছেন নাইম। ৫০ বলে ৬৪ রানের ইনিংসে ৩টি চার মেরেছেন।ছক্কা মেরেছেন আরেকটি বেশি। 

ফর্ম ফিরে পেলেন সাকিব

আগের খেলায় ২৮ বলে ২০ রান করায় সাকিবকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচেই ফর্ম ফিরে পেয়েছেন সাকিব। দলের বিপদের সময় নাইমের সাথে পার্টনারশীপে উদ্ধার করেছেন বিপর্যয় থেকে। ওমানের বিরুদ্ধে সাকিব-নাইমের ৮২ রানের একটি পার্টনারশীপ বাংলাদেশকে খেলায় অনেক সংহত অবস্থানে নিয়ে আসে।

ওমানের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে আউট হওয়ার আগের ২৮ বলে সাকিব করেছেন ৪০ রান। এর মধ্যে ছিল ৬টি চার।শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে আউট হন রান আউটে খাড়ায় পড়ে। কিছুটা আয়েশী ভঙ্গিতে দৌঁড়াতে গিয়ে উইকেট বিসর্জন দেন সাকিব। না হলে হয়তো অনেক দূর যেতে পারতেন। দলের স্কোরও আরও বড় হত।

ব্যাটহাতে অপূর্ণতার সেই ঘাটতি  সাকিব আল হাসান ওমানের বিরুদ্ধে পুষিয়ে দিয়েছেন বল হাতে। এই ম্যাচে অবশ্য বল হাতে নিয়েছেন পাওয়ার প্লের ওভারে। চতুর্থ ওভারে বোলিং করতে এসে দিলেন ৭ রান। তেমন আশাপ্রদ নয়। তবে দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে ম্যাচের চেহারা বদলে দেন সাকিব।

হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ৪৮ বলে ৭২ রানের দূরত্বে ছিল ওমান। এমন পরিস্থিতিতে ১৩ তম ওভারে সাকিবকে বোলিংয়ে আনেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

৩৩ বলে ৪০ রান করে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা যতীন্দর সিংকে সে ওভারে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান সাকিব। এরপর ১৭তম ওভারহাতে ৫উইকেট নিয়ে ওমান২৪বলে ৫০রানের দূরত্বেছিল।

ওই ওভারটা বাজে হলে বাংলাদেশ সম্ভবত আর ম্যাচে ফিরতে পারত না। সাকিব ঠিক এমন মুহূর্তেই ৩ রানে ২উইকেট নিয়ে জয়ের পাল্লাভারী করেন বাংলাদেশের পক্ষে। উইকেট দুটি আবার টানা দুই বলে।

বোলিংয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট এবং ব্যাটিংয়ে ৬ চারে সাজানো ইনিংসে ম্যাচসেরা সাকিব যেন বুঝিয়ে দিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই তিনি সব্যসাচী-ছন্দে ফিরলেন।

মুস্তাফিজেরঅসাধারণ নৈপূণ্য

নাইমও সাকিবের মাহাত্ম্যের চেয়ে কোন অংশেকম নয় দ্য ফিজের অবদান। ওমানের ব্যাটাররা যখন বারবার চোখ রাঙানি দেখাচ্ছিলেন ব্যাটিংয়ের ঝড়ে তখন মুস্তাফিজই ওদের লাগাম টেনে ধরেছেন বারবার।

নিজের প্রথম ওভারেরদ্বিতীয় বলেইএলবির ফাঁদে ফেলেছেন ওমানেরও পেনার আকিবকে। উইকেট পেলেও এই ওভারে ৫টি ওয়াইড দিয়েছেন মুস্তাফিজ। এরপর ষষ্টওভারে আবার বল করতে আসেন দ্য ফিজ।

তার প্রথম বলেই একটি ক্যাচ দিয়েছিলেন এই ম্যাচেও মানের সর্বোচ্চ স্কোরার জিতেন্দর সিং।কিন্তু অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সহজ ক্যাচটি তালুবন্দী করতে পারেননি। এর দুই বল পরে ইমুস্তাফিজ ২১ রানে আউট করেন সেট ব্যাটার প্রজাপতিকে।ম্যাচে কিছুটা ফিরিয়ে আনেন বাংলাদেশকে।

এরপর আঠারতম ওভারে আবার বোলিংয়ে এসে দুই উইকেট তুলে নেন দ্য ফিজ। ম্যাচের শেষ ওভারে সুযোগ এসেছিল ৫ উইকেট তুলে নেয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আর সম্ভব হয়নি।

খেলার জগতে আপনাকে স্বাগত। নতুন লেখা পড়ার জন্য আমাদের পেইজে একটি লাইক দিন।

Related posts

Leave a Comment