জমে উঠেছে পাকিস্থান বনাম ইংল্যান্ডের টি-20 সিরিজ

পাকিস্থান বনাম ইংল্যান্ডের টি-20

৬ ম্যাচ শেষে সিরিজে ৩-৩ সমতা

পাকিস্থান বনাম ইংল্যান্ডের ৭ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ দুই দলের তীব্র প্রতিদ্বন্দিতায় দারুন জমে উঠেছে। ৭ ম্যাচের এই টি-২০ সিরিজে ৬ ম্যাচ শেষ হয়েছে। দুই দলই তিন বার করে জয়লাভ করেছে। ফলে এই মুহুর্তে সমতায় আছে সিরিজ।

শুক্রবার ৬ষ্ঠ ম্যাচে পাকিস্থানকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা চাপে পড়ে পাকিস্থান। ১৫ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার। নিয়মিত ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বিশ্রামে পাঠিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চের মোহাম্মদ হারিসকে নামায় পাকিস্থান। তিনি একটি ছক্কা মারলেও ৮ বল খেলে মাত্র ৭ রানে আউট হয়ে যান।

তিনে নামেন শন মাসুদ। কিন্তু দ্বিতীয় বলে ডেভিড উইলির পেসে পরাভূত হয়ে এলবিডব্লু হন তিনি ডাক মেরে। অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে পাকিস্থানের অধিনায়ক বাবর আজম দুই ব্যাটসম্যানের যাওয়া আসা দেখেন।

এরপর সব দায়িত্ব নিজের চওড়া কাঁধে নিয়ে নেন বাবর আজম। দিনটি নিজের করে নিতে যতঠুকু করা সম্ভব তার সবই ট্রাই করেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করে যান ইনিংসের শেষ পর্যন্ত।

৫৯ বলের মোকাবেলায় বাবর করেন ৮৭ রান ১৪৭.৪৫ ষ্ট্রাইকরেটে। ৭টি চারের সাথে ৩টি ছক্কাও আছে তার এই ইনিংসে। অন্যপ্রান্তে কোন ব্যাটসম্যানই থিতু হতে না পারায় চড়াও হতে পারেননি খুব বেশি। তবু একপ্রান্ত আটকে রেখে ভাল ষ্ট্রাইকরেটে ব্যাট করায় মোটামুটি ভাল সংগ্রহ জুটে পাকিস্থানের।

এই ম্যাচেই বাবর আজম দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসাবে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে ৩ হাজার রানের রেকর্ডের মাইল ফলক স্পর্শ করেন। ব্যাটিং ক্যারিয়ারের ৮১ তম ইনিংসে এসে এই মাইলফলক ছুঁলেন বাবর। ৪১ বলে অর্ধশতক করার পর রিচার্ড গ্লিসনকে ছক্কা মেরে স্বপ্নের এই রেকর্ডে নাম লেখান বাবর আজম।

এর আগে এই রেকর্ড গড়েন ভারতীয় দলের সাবেক অধিনয়াক বিরাট কোহলী। কোহলীরও লেগেছিল সমান সংখ্যক ইনিংস।

মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হায়দার আলি এক চার ছক্কায় ১৪ বলে করেন ১৮। পাঁচে নেমে ইফতিখার আহমদ করেন ২১ বলে ৩১।  তার ইনিংসে ছিল দুটি করে চার ও ছক্কা। আসিফ আলী ও মোহাম্মদ নওয়াজ দুইজনে মিলে করেন ১৬ বলে ২১। এর মধ্যে বলপ্রতি রানের ইনিংসে ৯ বলে সমান সংখ্যক রানের ইনিংসে আসিফ আলী একটি চার মারেন। তবে ১৭১ ষ্ট্রাইকরেটে শেষ দিকে ৭ বলে একটি ছক্কা সহ ১২ রান করেন মোহাম্মদ নওয়াজ।

শেষ পর্যন্ত পাকিস্থান ১৭০ রানের টার্গেট দেয় ইংল্যান্ডের সামনে। সিরিজের আগের দুটি ম্যাচে এর চেয়ে কম সংগ্রহ গড়েও জিতছিল পাকিস্থান। তাই মনে হচ্ছিল এক ম্যাচ হাতে রেখঐ সিরিজ জিতে নেবে তারা।

কিন্তু ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ভাবনায় ছিল অন্যকিছু। আগের দুটি ম্যাচ চেজ করতে নেমে ক্লোজ ফিনিশিংয়ে হারেন তারা। তাই এই ম্যাচে ষ্ট্রাটেজি পাল্টে প্রথম ওভার থেকেই আক্রমন শুরু করেন।

নবীন অপেনার ফিল সল্টের সাথে অভিজ্ঞ অ্যালেক্স হেইলস চড়াও হন পাকিস্থানের উদ্বোধনী বোলারদের উপর।  এরমধ্যে অ্যালেক্স হেইলস করেন ১২ বলে ২৭। ষ্ট্রাইক রেট ২২৫। চারটি চারের সাথে ছিল একটি বিশাল ছক্কা। তার এই ইনিংসে ইংল্যান্ডের মোমেন্টাম চলে আসে।

অপর প্রান্তে ফিল সল্ট লবন লাগিয়ে দেন পাকিস্থানের কাটা গায়ে। ৪১ বলের অপরাজিত ইনিংসে তিনি করেন ৮৮ রান। এর মধ্যে মাত্র ১৮ বলে তুলে নেন ফিফটি। যা তৃতীয় দ্রুততম ফিফটির বিশ্ব রেকর্ড টিটুয়েন্টি ম্যাচে। ১৩টি চারের সাথে ৩টি ছক্কাও মারেন ওয়েলস থেকে আসা এই উদ্ধোধনী ব্যাটসম্যান।  

আরও পড়ুন: তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ ভারতের   

চতুর্থ ওভারে হেইলস্ কে ফেরান পাকিস্থানের লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার শাদাব খান। ইনিংসের তখন চতুর্থ ওভার। তবে এর আগেই ফিফটি পেরিয়ে যাওয়ায় ইংল্যান্ডকে তেমন একটা চাপে পড়তে হয়নি।

ওয়ানডাউনে ডেভিড মালান ফিল সল্টকে সাপোর্ট দিয়ে যান। তিনি করেন ১৮ বলে ২৬ রান। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার। শাদাব খানের বল এলবিডব্লু হন মালান। তবে মালান আউট হলেও ইংল্যান্ড তখন চলে গিয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। যেখান থেকে ম্যাচ হারাটা সত্যিকার অর্থেই কঠিন।

আরও পড়ুন: দূর্দান্ত জয়ে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা

যদিও ফিল সল্ট এসময় কিছুটা কম আক্রমণাত্মক ছিলেন। তবে অপরপ্রান্তে বেন ডাকেট ছিলেন সপ্রতিভ। চারটি চার সহকারে অপরাজিত থেকে বেন করেন ১৬ বলে ২৬। ষ্ট্রাইক রেট ১৬২.৫০।

শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড জিতে যায় ইনিংসের সাড়ে পাঁচ ওভার হাতে রেখেই। টার্গেট আরেকটু বড় হলে হয়তো ফিল সল্ট সেঞ্চুরী নিয়েই ফিরতেন। তার ঝড়ো গতির ৪১ বলে ৮৮ রানের ইনিংসের কাছে শেষ পর্যন্ত ম্লান হয়ে যায় বাবর আজমের ৫৯ বলে ৮৭ রানের ইনিংস। তাই প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ পুরষ্কারটি শেষ পর্যন্ত জিতে নেন ফিল। 

Related posts

Leave a Comment