বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এবার আরও স্বচ্ছ এবং নিরাপদ হতে চলেছে। ‘স্বচ্ছ ফ্র্যাঞ্চাইজি, পরিচ্ছন্ন বিপিএল’—এই স্লোগান নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, ১১টি আবেদন থেকে প্রাথমিক পর্যালোচনায় আটটি প্রতিষ্ঠান টিকে গেছে। এদের পটভূমি যাচাইয়ে দেশীয় নিরাপত্তা এজেন্সি এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) জড়িত।
আরও জানতে পারেনঃ বিপিএল ২০২৬ সময়সূচি- আপডেট তথ্য
অতীতের শিক্ষা থেকে নতুন পথ
বিপিএলের দ্বিতীয় আসরের পর একাদশ আসর সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে। কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলোয়াড়দের বেতন না দেওয়া এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে জর্জরিত। এ কারণে বিসিবি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে। তিন সদস্যের দল ৭০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে ৯০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেয়। এই সুপারিশ অনুসরণ করে এবারের আয়োজন।
গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বুলবুল বারবার বলেছেন, লিগ হবে পরিষ্কার এবং বিশ্বাসযোগ্য। মিঠু যোগ করেন, “বিপিএলের ছবি ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। খারাপ কিছু রোধে সবাই মিলে কাজ করছি।” এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া হবে পাঁচ বছরের জন্য। শুধু প্রতিষ্ঠিত এবং স্বচ্ছ ইমেজের ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য।
যাচাই-বাছাইয়ের কঠোর প্রক্রিয়া
এক গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য বলেন, “গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রতিটি কোম্পানির অতীত-বর্তমান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশীয় এজেন্সি স্থানীয় রেকর্ড চেক করবে, আইসিসি ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি।” আইসিসির ইন্টেগ্রিটি টিমের কর্মকর্তারা লিগে নিয়োগ পাবেন। এতে খরচ বাড়লেও লাভবান হবে বিসিবির নিজস্ব দল।
গত আসরের ফিক্সিং সন্দেহে জড়িতদের তালিকা আইসিসির অ্যালেক্স মার্শালের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে তাদের নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ইওআই জমাকারীদের তালিকা রাষ্ট্রীয় এজেন্সিতে পাঠানো। আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করছে বিসিবি।
আর্থিক নিরাপত্তা এবং অযোগ্যতা
আবেদনের সঙ্গে দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার নেওয়া হয়েছে। নির্বাচিতরা ছয় মাসের জন্য ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে। মিঠু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আইনজীবী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফার্মসহ সবাই ১১টি আবেদন পর্যালোচনা করেছে। তিনটি—এসকিউ স্পোর্টস, বাংলামার্ট লিমিটেড এবং মাইন্ড ট্রি—অযোগ্য। চূড়ান্ত তালিকা ৪ নভেম্বর ঘোষণা।”
এসকিউ চিটাগং কিংস চেয়েছিল, কিন্তু কাগজপত্র অসম্পূর্ণ। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়েছে বিসিবির আবেদনে। মাইন্ড ট্রি খুলনা টাইগার্সের জন্য, বাংলামার্ট নোয়াখালীর জন্য আবেদন করেছিল।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
বিপিএল এবার দুর্নীতিমুক্ত হয়ে উঠবে। খেলোয়াড়, দর্শক এবং স্পনসরদের বিশ্বাস ফিরবে। বিসিবির এই কঠোরতা ক্রিকেটের সুনাম বাড়াবে। আসুন দেখি, নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কীভাবে লিগকে রাঙিয়ে তুলবে!
