ইংল্যান্ডের সূচনা হল অপ্রত্যাশিত হার দিয়ে।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিবেশী আয়ারল্যান্ডের সাথে হার বিশ্বকাপ টি-২০তে তাদের নকআউট পর্বে উত্তরণকে কিছুটা অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।
টসে জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। বৃষ্টি হানা দিতে পারে এরকম ম্যাচে পরবর্তীতে দুইবার চিন্তা করবেন সব অধিনায়কই। কারণ বৃষ্টি আইনে যে কেউই ধরাশায়ী হতে পারেন সংশ্লিষ্ট আইনের বিভিন্ন ধারায় পড়ে।
একদিন আগে যেমন ধরাশায়ী হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ওভারে প্রায় পঞ্চাশ রান তুলেও পয়েন্ট বন্টন করতে হয়েছে তাদের জিম্বাবুয়ের সাথে। আজ ইংল্যান্ডকে হারতে হল নির্ধারিত রানরেটের চেয়ে কিছুটা কম স্কোর করার জন্য।
স্কোরবোর্ডে রান তোলার জন্য আইরিশ ব্যাটসম্যানরা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বড় কিংবা মাঝারি স্কোর তুলতে লাগে পরিকল্পনা। যাকে বলা হয় গেম প্ল্যান। সেই প্ল্যান বাস্তবায়নের চ্যালেন্জে আইরিশরা নিশ্চয়ই ফুল মার্কস পাবে।
অভিজ্ঞ এন্ডি বলবার্ণি আর পল ষ্টার্লিং সুন্দর সূচনা করেন ইনিংস উদ্বোধনে নেমে। ৮ বলে এক চার ও ছয়ে ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন পল ষ্টার্লিং। দলীয় রান তখন ২১। তিনে নামেন টাকার। তিনি বিলের সাথে গড়েন ৮২ রানের পার্টনারশীপ।
এন্ডি বলবার্নি খেলেছেন প্রচন্ড দায়িত্বশীল একটি ইনিংস। ব্যাটিংয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন। আবার রানের চাকাও সচল রেখেছেন। উইকেটে ছিলেন ৭৪ মিনিট। ৪৭ বলে ৬২ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। এতে ছিল ৫টি চার এবং ২টি ছক্কা।
ক্র্যাম্পার করেন ৩টি চারের সাহায্যে ১১ বলে ১৮ রান। ডবল অংকে পৌঁছাতে পেরেছেন আরও একজন আইরিশ ব্যাটার। তিনি ডিলানী। ১০ বলে করেছেন ১২ রান। বাউন্ডারি একটি।
ইংল্যান্ডের পেসবোলার মার্ক উড ও স্যাম কারেন নেন যথাক্রমে ৩টি ও ২টি উইকেট। লিয়াম লিভিংষ্টোনের কার্য্যকরী অফস্পিন বোলিং তাকে এনে দেয় ৩ উইকেট। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আয়ারল্যান্ডের শেষ উইকেট তুলে নেন বেন ষ্টোক।
আরও পড়ুন: ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে পাকিস্থানকে জেতালেন বাবর আজম
১৫৮ রানের টার্গেট টি-২০ ক্রিকেটে আজকাল তেমন নিরাপদ নয়। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং শক্তির কাছে তেমন বড়ও নয়। কিন্তু শুরুতে উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যেতে হয় ইংল্যান্ডকে।
প্রথম ওভারেই শুন্য রানে ফিরে যান এই সময়ের সেরা টি-২০ ব্যাটসম্যান জস বাটলার। একটু পরেই তার পথ ধরেন এলক্স হেইলস। ৫ বলে তিনি করেন ৭ রান। দলীয় রান তখন ১৪।
ওয়ান ডাউনে নামা ডেভিড মালান এক প্রান্ত আগলে ধরে কিছুটা চেষ্টা চালান ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ফেরাতে। প্রথমে বেন ষ্টোকের সাথে ছোট একটি পার্টনারশীপ গড়েন। কিন্তু দলীয় ২৯ রানে ব্যাক্তগত ৬ রানে ফিরে যান বেন ষ্টোক।
হ্যারি ব্রোকও চেষ্টা করেছেন উইকেটে থিতু হতে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে ২১ বলে করেন ১৮। একটি চার মেরেছেন। কিন্তু পরিসি্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি।
মইন আলী অবশ্য শুরু থেকেই চেষ্টায় ছিলেন। বৃষ্টি আসার আগ পর্যন্ত ১২ বলে করেছেন ২৪ রান। তিনটি চার ও একটি ছক্কা ছিল তার এই ক্যামিও ইনিংসে। অপরপ্রান্তে মালানও তখন আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩৫ রানে তামতে হয় তাকে। ৩৭ বলে ৩৫ রানের এই ইনিংসে বাউন্ডারি মাত্র দুইটি।
ইংল্যান্ডের পরাজয়ের পিছনে মালানের এই ইনিংসের দায় অনেকটাই। যদিও ফ্রন্ট লাইন ব্যাটসম্যানরাও ব্যর্থ হয়েছেন শোচনীয়ভাবে।
বৃষ্টি এসে খেলা থামিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত মইন আলী যেভাবে খেলছিলেন তাতে ম্যাচে ইংল্যান্ডের আশা ছিল অনেকটাই। ১৪.৩ বলে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল তখন ৫ উইকেটে ১০৫। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস মেথড অনুযায়ী তখন ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১১১ রান।
এই পরাজয়ে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার ব্যাপারটি কিছুটা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে কষ্টার্জিত জয়ের পর এই হার। ইংল্যান্ডের রান রেটও এখন বিবেচনার বিষয়।