মেহেদী হাসান মিরাজের অসাধারণ নৈপূন্যে বিপর্যয়ে পড়েও পরপর দুই ম্যাচ জিতে ভারতের বিরুদ্ধে উপর্যুপরি দ্বিতীয়বারের মত দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
২০১৫ সালে প্রথমবারের মত ভারতের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। ৭ বছর পরের দেখায় আবারও সিরিজ হারল ভারত।
মেহেদী হাসান মিরাজ সাবলীল নৈপূন্যে ভারতকে হারানোয় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।
মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কাছে স্রেফ উবে গেছে ভারতের সকল কৌশল।
প্রথম ম্যাচে শেষ উইকেট উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজকে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে খাঁদের কিনার থেকে জয়ের চূড়ায় পৌঁছানোয় মূল ভূমিকা পালন করেন মেহদী হাসান মিরাজ।
এর আগে বোলিংয়েও দারুণ নৈপূণ্য দেখান মিরাজ। ৯ ওভার বোলিং করে একটি মেডেনসহ ৪৩ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৩৯/৯
ধ্বংসস্তূপ থেকে দলকে উদ্ধার করে জয়ের লগ্নে পৌঁছাতে ৩৯ বলে ৩৮ রান করেন মিরাজ। ২টি ছক্কা ও ৪টি চারের মার ছিল তার ইনিংসে।
মিরাজের অপরাজিত এই ইনিংসের কারনেই বাংলাদেশ জয়ের মুখ দেখে।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় বিবেচিত হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
জেমি সিডন্সের অধীনে ব্যাটিংয়ের কলাকৌশল নিপূণভাবে করায়ত্ত করেছেন মিরাজ।
সাম্প্রতিক কালে ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট উন্নত লক্ষ্য করা গেছে মিরাজের ব্যাটিংয়ে।
চার ছক্কা মারার অ্যাপ্রোচেও এসেছে অনেক পরিবর্তন।
ভারতের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফর্মেন্স প্রদর্শন করছেন মিরাজ।
বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং সব বিভাগেই অনবদ্য নৈপূন্য মিরাজের।
সাকিব আল হাসানের পর মেহেদী হাসান মিরাজ হতে যাচ্ছেন আরেকজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
টেষ্ট ক্রিকেটে মিরাজ এ পর্যন্ত নিয়েছেন ৩৫ টেষ্টের ৫৯ ইনিংসে ১৩৫ উইকেট।
টেষ্ট ব্যাটিংয়ে মিরাজের সর্বোচ্চ স্কোর ১০৩।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬৬ ম্যাচে মিরাজ নিয়েছেন ৭৮ উইকেট। সেরা ৪/২৫
শেষ পর্যন্ত করেছেন ম্যাচজয়ী সেঞ্চুরী। ৮৩ বলে ঠিক ১০০ রান। ৮টি চার ও ৪ টি ছক্কাসমেত।
৬ ওভার বল করে ৪৬ রানে নিয়েছেন ভারতের মূল্যবান দুইটি উইকেট।
শেষ পর্যন্ত পরপর দুইম্যাচে সেরা খেলোয়াড় বিবেচিত হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ভারতের বিরুদ্ধে দ্বি-পক্ষীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ায় দলে অলরাউন্ডার হিসাবে মিরাজের জায়গা পাকা হয়ে গেল। বিশেষ করে ওডিআই দলে এখন থেকে মিরাজের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে না।
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারল না বাংলাদেশ
ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে মিরাজের এই পারফর্মেন্সে। ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলেসহ অনেকেই প্রশংসা করেছেন মিরাজের। ইংল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার মইন আলীও দারুণ উচ্ছ্বসিত মিরাজের এই অসাধারণ নৈপূন্যে।
মেহেদী হাসান মিরাজের এমন পারফর্মেন্স অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও দলের হয়ে ভাল খেলা উপহার দিয়েছেন মিরাজ। এর মধ্যে কিছুদিন আগে আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে আফিফের সাথে একটি ম্যাচজয়ী পার্টনারশীপ উপহার দিয়ে বাংলাদেশকে জেতান মিরাজ।
দলের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়েও নেমেছেন। আবার মিডল অর্ডারেও নিয়মিত নামছেন। আবার প্রায়ই দেখা যায় দলের হয়ে বোলিং ওপেনিং করছেন। ফিল্ডার হিসাবেও তার জুড়ি মেলা ভার।
পঞ্চ পান্ডবের মধ্যে মাশরাফি ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছেন। মুশফিক, মাহমুদুল্লাহও সহসাই চলে যাবেন। সেই সাথে সাকিবও থেমে যাবেন এক সময়। আগামী দিনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য মেহেদী হাসান মিরাজ সেক্ষেত্রে একটি যুৎসই বিকল্প একথা বলা যায়।