ল্যাটিন শৈল্পিক ফুটবলের প্রদর্শনীতে কোরিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

ব্রাজিল

খেলা শুরুর ছয় মিনিটের মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ার জালে ব্রাজিলের গোল! বিস্ময়ের রেশ না কাটতেই এর চার মিনিট পর প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় গোল ব্রাজিলের। বিশ্বকাপের নক আউট পর্বের সব চাপ উড়িয়ে দিয়ে সাবলীল নৈপূন্যে আর ব্রাজিলের এমন আধিপত্য়ে দিশেহারা কোরিয়া।

সেই ছন্দ ধরে রেখে ম্যাচের ২৮ মিনিটে ব্রাজিলের রিচার্লিসন করলেন তৃতীয় গোল। এর আগের মুহুর্তে দক্ষিণ কোরিয়ার গোল মুখে বল পেয়ে প্রশিক্ষণের ছলে তিন বার হেড করে নিপূরণ কসরত দেখান। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের এমন স্ফুরণ এর আগে  কয়বার দেখেছে ফুটবল বিশ্ব?

৩৫ মিনিটে ব্রাজিলের আরেকটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে লুকাস বল দক্ষিণ কোরিয়ার জালে পাঠিয়ে নেইমারের সাথে গোল উদযাপনের নৃত্য শুরু করেন। গ্যালরি ফেটে পড়ে উল্লাসে!

৭৬ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে সান্ত্বণাসূচক একমাত্র গোলটি করেন পাইক সিউং।

দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল ছিল অনেকটাই নির্ভার। প্রথমার্ধেই বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় গোল বৃদ্ধি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠার কোন কারন ছিল না। এই সুযোগে দক্ষিণ কোরিয়া একমাত্র গোল পরিশোধ করতে পেরেছে।

দ্বিতীয়ার্ধে নেইমারকে উঠিয়ে নেন ব্রাজিলের কোচ। এই দৃশ্য অবশ্য প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই দেখা যায়। যদিও গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচের ইনজুরির কারনে পর আর মাঠে নামেননি নেইমার।

গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে একমাত্র গোলে পরাজয়ের পর ব্রাজিলের খেলা নিয়ে বিশ্বব্যাপী ভক্তদের মধ্যে অজানা শংকার সৃষ্টি হয়। তবে মাঠে নেমে সব শংকা দূর করে দেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা।

ব্রাজিলের কিংবদন্তী পেলের অসুস্থতায় তার জন্যই খেলতে নামেন নেইমাররা। মিশন হেক্সা সফল করার অভিপ্রায়ে নিজেদের উজাড় করে খেলার সংকল্প নিয়েই মাঠে নামেন তারা।

অপরদিকে এশিয়ার ফুটবল পরাশক্তি দক্ষিণ কোরিয়া এ ম্যাচে শুরু থেকেই ছিল নার্ভাস। এর মধ্যে ম্যাচ শুরুর দশ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল খেয়ে হতভম্ব হয়ে পড়ে তারা।

নকআউট পর্বের ম্যাচে এই প্রথম ব্রাজিল খেলার শুরুর ৩৬ মিনিটের মধ্যে ৪ গোল দিয়ে ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম এ রকম সাফল্য পেল। এর আগে ৯৮ সালের নকআউট পর্বে চিলির বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল।

বিশ্বকাপ ফুটবলে দক্ষিণ কোরিয়া এ পর্যন্ত সাত বার মোকাবেলা করেছে দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলোকে। এর মধ্যে কোন সাফল্য নেই তাদের। শতভাগ হার। বিশ্বভাগে শুধুমাত্র স্কটল্যান্ড ৮ ম্যাচ খেলেও জিততে পারেনি ল্যাটিন আমেরিকান দলগুলোর বিরুদ্ধে।

এই ম্যাচে গোল করে ব্রাজিলের হয়ে আরেকটি অনন্য রেকর্ডের অধিকারি হলেন ব্রাজিলের বর্তমান সুপার ষ্টার নেইমার। কমপক্ষে তিনটি বিশ্বকাপে গোল করেছেন ব্রাজিলের হয়ে এমন খেলোয়াড়দের তালিকায় এর আগে শুধু কিংবদন্তী পেলে ও আরেক সুপারষ্টার রোনাল্ডার নাম ছিল। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ সালের বিশ্বকাপে গোল করে নেইমারও শরীক হলেন সেই তালিকায়।

দ্বিতীয় পর্বের প্রথম খেলায় এশিয়ার আরেক সুপার পাওয়ার জাপান বিদায় নিয়েছে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে দেশে ফেরার টিকেট কনফার্ম করেছে জাপান।। জাপানের সাথে শরীক হল দক্ষিণ কোরিয়াও। আর ক্রোয়েশিয়াকে কোয়ার্টার ফাইনালে পাচ্ছে ব্রাজিল।

Related posts

Leave a Comment