শ্রীলংকায় সদ্য সমাপ্ত চারজাতি কাপ ফুটবলে আবারও আশাহত হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল । ফাইনালে উঠার জন্য যেখানে ড্র করলেই হয়ে যেত দুর্বল শ্রীলংকার বিরুদ্ধে, সেখানে পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে খালি হাতে বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এরকম হয়ে আসছে নিকট অতীতে প্রায় প্রতিটি টুর্নামেন্টে।
সাফগেমস ফুটবল যা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাশীল টুর্নামেন্ট বলে বিবেচিত হয়সেখানে বাংলাদেশের শিরোপা খরা দীর্ঘ্যদিনের। সবগুলো দলই প্রায় সমান শক্তির। কিন্তু তাদের সাথে পেরে উঠে না বাংলাদেশ। অবশ্য ভারত ও মালদ্বীপ দলকে এখন আর বাংলাদেশের সমান শক্তির বলে বিবেচন করারসুযোগ নেই। তারা এগিয়েগেছে অনেকটাই।
এক সময় যে মালদ্বীপকে বাংলাদেশ বলে কয়ে হালিগোল দিত। তারাই এখন বাংলাদেশকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে দেয়। আর ভারত তো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিটি খেলায় নামেই ফেভারিট হিসাবে। অতীতে তাদের ভাইচুং ভুটিয়া আর বর্তমানে সুনীলছেত্রীর সাথে পেরে উঠেনা বাংলাদেশ। অবধারিতভাবে গোল করে বসেনতারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
সদ্যসমাপ্ত চারজাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ তাদের থেকে ফিফা র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা মালদ্বীপকে হারিয়েছে।এই জয়ও অবশ্য এসেছে প্রায় ১৮ বছর পর! সাফল্য বলতে এই টুকুই।
ফিফার ্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৮৭। মালদ্বীপ আছে১৫৬তে। তারা এক সময় বাংলাদেশের পিছনে ছিল। কিন্তু এখন এগিয়ে গেছে অনেকটাই।
মালদ্বীপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়কে ইতিবাচক হিসাবেদেখলে বাকি দুই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অনায়াসে জয়লাভ করার কথা। কিন্তু টুর্নামেন্টের বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে দুর্বল সিসিলিজের বিরুদ্ধে জয়লাভ করতে না পারাএকটি বড় ব্যর্থতা হিসাবেইদেখা যায়। ভারত মহাসাগরেরএকটি দ্বীপদেশে যা আফ্রিকা মহাদেশেরঅন্তর্ভুক্ত সিসিলিজ আন্তর্জাতিক ফুটবলে কোন বড় শক্তিনয়। ফিফা র্যাংকিংয়েতাদের অবস্থান ১৯৯। দুর্বল সেইদলের বিপক্ষে ১–১ গোলেড্র করেছে বাংলাদেশ।
মালদ্বীপের বিরুদ্ধে জামাল ভুঁইয়া ও তপু বর্মনের(পেনাল্টি) গোলে ২–১ গোলে জয়টা চারজাতি এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের জন্য।র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা একটি দলেরবিরুদ্ধে জয়লাভ করাটা অবশ্যই ইতিবাচক, হয়তো ফিফা র্যাংকিংয়ে দুই একধাপ উন্নতিওদেখা যেতে পারে এইজয়ের সুবাদে।
কিন্তু মালদ্বীপকে হারিয়ে যেখানে আরও এগিয়ে যাবার কথা সেখানেই ব্যর্থতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। র্যাংকিংয়ে পিছিয়েথাকা শ্রীলংকাকে বাগে পেয়েও ড্র কিংবা হারাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
শ্রীলংকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ড বরাবরই ভাল। ফুটবলে তারা এমন কোনবৃহৎ শক্তিও নয়। ড্র করলেই যেখানে ফাইনাল সেখানে শেষ মুহুর্তের পেনাল্টিগোলে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। বেশিরভাগসময়ে যদিও খেলাটিতে ১–০ গোলে পিছিয়েছিল বাংলাদেশ। ২৫ মিনিটে এগিয়েযায় শ্রীলংকা। সেখানে ৭১ মিনিটে সমতাফেরায় বাংলাদেশ। খেলার অন্তিম সময়ে পাওয়া পেনাল্টিতেম্যাচ জিতে নেয় শ্রীলংকা।
যদিও টুর্নামেন্টে শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকাকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে দুর্বল সিসিলিজ। তাদের সাফল্যকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু দুর্বল দলগুলো যেখানে শিরোপা জিতে নেয় বারবার সেখানে বাংলাদেশ কেন ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে আছে বছরের পর বছর ধরে?
