টি-২০ বিশ্বকাপ: সুপার লীগে ভাল করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশ!

টি-২০ বিশ্বকাপ: সুপার লীগে ভাল করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশ!

টি-২০ বিশ্বকাপ শেষপর্যন্ত পাপুয়া নিউগিনিকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ।  গতকয়েকদিন এই নিয়ে অনেকউৎকন্ঠার প্রহর গুণতে হয়েছে বাংলাদেশী সমর্থকদের। মাঠের খেলায় শেষপর্যন্ত সব বাধা দূরকরেই এগিয়েছে বাংলাদেশ।

 

এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ’ এ সুপারটুয়েলভে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এবং এর আগেরদুই চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড শ্রীলংকা। এইদুইয়ের বাইরে আছে পরাক্রমশালী অষ্ট্রেলিয়াএবং দক্ষিন আফ্রিকা।

 

আইসিসির আগের সূচী  অনুযায়ী টি-২০ বিশ্বকাপ’ এ বাংলাদেশ দুই নাম্বার গ্রুপে উপমহাদেশীয় দেশগুলোর সাথে ছিল। কিন্তুটুর্ণামেন্ট শুরুর পর হঠাৎ সিদ্ধান্তবদলে আইসিসি প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে জানায় সুপার লীগে কোয়ালিফাই করলেবাংলাদেশ কে খেলতে হবেএক নাম্বার গ্রুপে।

আরও পড়ুন: ক্যাচ মিসের মাশুল: ভাল খেলেও হার বাংলাদেশের

 

এই সিদ্ধান্তের কারনে বাংলাদেশের প্রস্তূতি এবং গেম প্ল্যানঅনেকটা পরিবর্তন করতে হবে বলেইমনে হচ্ছে। উপমহাদেশের দলগুলো ভাল স্পিন খেলতেপারে। কিন্তু পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধেঅপেক্ষাকৃত দুর্বল।

সেই চিন্তা মাথায় রেখেই দলে তিনজন পেসার রাখার একটি প্রবণতা কিছু দিন থেকে লক্ষ্য করা গেছে। মুস্তাফিজের সাথে তাসকিন এবং সাইফ উদ্দিনকে খেলানো হচ্ছিল গত কিছুদিন থেকে। তবে এবার মনে হয় দলের সেরা একাদশে কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসা হতে পারে।

 

মিরপুর ষ্টেডিয়ামে সদ্য সমাপ্ত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অষ্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জন স্পিনার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে সাফল্য লাভ সম্ভব হয়েছে। দুই দলের বিরুদ্ধে সিরিজ বিজয়ী হয়েছে স্বাগতিকরা।

 

টি-২০ বিশ্বকাপ’ এ স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ক্রিকেট শক্তির দেশগুলোর একটি দুর্বলতা আছে। এই কারনেই উপমহাদেশীয় যেকোন দেশের সাথে খাবি খায়তারা। স্পিনের ঘূর্ণিতে কাবু হয়ে পড়ে  সহজেই।

 

বর্তমান অবস্থায় প্রতিদ্বন্দী দলগুলোর নাম দেখলে আবারো স্পিন নির্ভর অ্যাটাক সাজানোর কথা বলবেন সবাই।এ ক্ষেত্র দলে তিনজন বিশেষ্জ্ঞ স্পিনার রাখার কথা বলেছেন অনেকেই। সাকিব আল হাসান, মেহদীহাসান এবং নাসুম আহমেদকে নিয়ে আক্রমণ সাজানোর কথা বলছেন তারা।

 

প্রথম দুইজন দলে নিয়মিতই খেলেছেন বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে। তবে দলের কম্বিনেশন ঠিক রাখতে গিয়ে নাসুম আহমদকে নামানো হয়নি।

টি-২০ বিশ্বকাপ’ এ আরব আমিরাতের উইকেটে বল টার্ণ করবে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। এই জন্য উইকেটের সুবিধা নিতে হলে দলে একজন স্পিনার বেশি রাখতে হব। তাই তিনজন স্পিনার নিয়ে আক্রমণ সাজানোর ব্যাবস্থা করতে হবে। 

টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্থানের স্পিন আক্রমনের বিরুদ্ধে খাবি খেয়েছে ওয়েষ্টইন্ডিজ। দলের পাওয়ার হিটার ব্যাটসম্যানরা মোহাম্মদ নবীর বলই খেলতেপারেননি ঠিকমতো। গোহারা হেরেছেন। তাই ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভাল সুযোগ আছে বাংলাদেশের।

টি-২০ বিশ্বকাপ’ এ বাংলাদেশের গ্রুপ শ্রীলংকাকে বাদ দিলে বাকিসবগুলো দেশেরই স্পিন আক্রমনের বিরুদ্ধে সমস্যা আছে। দক্ষিন আফ্রিকাকে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুইবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। এখন তাদের সেরাব্যাটসম্যান এভি ডি ভিলিয়ার্স নেই। ফাফ আর ককের উপরেই ভরসা। এদের আটকাতে পারলেদক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখতেইপারে বাংলাদেশ।

ওয়ানডে ক্রিকেটের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের টিটুয়েন্টি টিমও অনেক শক্তিশালী। তবে তরাও ধরা খেতে পারে স্পিনের ঘূর্ণিতে। উইকেট যদিও স্পোর্টিং হবে। তবে সেখান থেকে টার্ণ আদায়করতে পারলে স্পিনাররা চেপে ধরতে পারবেন ইংল্যান্ডকেও।

অষ্ট্রেলিয়াকে কিছুদিন আগেই ঘরের মাটিতে হারিয়েছেবাংলাদেশ। যদিও তাদের দলকিছুটা খর্ব শক্তির ছিল। তবে সেই সিরিজ জয়ের কারনে প্রাপ্ত আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ চমকে দিতে পারে অষ্ট্রেলিয়াকেও। কারণ তারা এখন আর অজেয় নয়।

শ্রীলংকার সাথে বাংলাদেশের লড়াই হয় হাড্ডাহাড্ডি। তারা অতীতের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও এখন বাংলাদেশের সাথে বাছাইতে খেলতে হয়েছে। এখন আর সাঙ্গাকারা, মাহেলা, ভাস কিংবা মূরালীধরন নেই। সুতরাং তাদের সাথে মাঠেই হবে মুল লড়াই।

 

গ্রুপ পর্বের বাছাইতে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর কিছুটা স্তম্ভিত ছিল বাংলাদেশ দল। তবে পরবর্তী দুই ম্যাচে ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে এখন অনেকটাই চাঙা হয়েছে টাইগার বাহিনী। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে আবার।

বিশ্বকাপের মুলপর্বে যেহেতু ভাল দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলবে টাইগাররা, সেহেতু তাদের হারানোর কিছু নেই। দুই নাম্বার গ্রুপে হলে আফগানিস্থান আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলতে হত।এদের সাথে জিতলে তেমন লাভ নেই। হারলে মহাক্ষতি! এছাড়া স্পিনে পারদর্শী ভারত পাকিস্থানের সাথে যে খুব একটা সুবিধা লাভ করা যেত এমন নয়।

তাই এক নাম্বার গ্রুপে বাংলাদেশ আছে অনেকটা স্বস্তিতেই। প্রতিদ্বন্দী দলগুলো সুপার পাওয়ার। এদের সাথে হারলে কোন সমস্যা নেই। জিতলে অনেক লাভ।

নিজেদের সেরা খেলা প্রদর্শনের এমন সুবর্ণ সুযোগ টাইগারদের সচরাচর মিলে না। তাইএবারের বিশ্বকাপের মূল পর্বে জানপ্রাণ উজাড় করে দিয়ে খেলবেন বাংলার টাইগার বাহিনীসমর্থকদের চাওয়া এটাই।

Related posts

Leave a Comment