২০০তম টি-২০ ম্যাচে ধোনী যেভাবে খেলেছেন

মহেন্দ্র সিং ধোনী

মহেন্দ্র সিং ধোনী ভারতের এ পর্যন্ত সফলতম অধিনায়ক। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জিতিয়েছেন অসংখ্য ম্যাচ। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও অন্যতম সফল অধিনায়ক বলা হয় তাকে।

চেন্নাই সুপার কিংসকে এ পর্যন্ত জিতিয়েছেন আইপিএলের ৪টি শিরোপা। গত কয়েক বছর থেকে বলা হয়ে থাকে এবারেই শেষ আইপিএল খেলছেন ধোনী। কিন্তু নৈপূণ্য, ফিটনেস এবং ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বগুণে তাকে শেষপর্যন্ত বাদ দেয়ার মত বিলাসিতা দেখাতে পারে না দলের ম্যানেজমেন্ট। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামেই যে তার পরিচিতি!

রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে এবারের আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের প্রথম লীগের খেলাটি ছিল ক্যাপ্টেন কুল মহেন্দ সিংহ ধোনীর অধিনায়ক হিসাবে ২০০তম টি-২০ ম্যাচ। সবার চোখ ছিল এই ম্যাচে ধোনী কেমন খেলেন।

ম্যাচের শুরুতে টসভাগ্য অনুকুলে ছিল ধোনীর। বিপক্ষ অধিনায়ক সন্জু স্যামসনকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে ফিল্ডিং বেছে নেন ধোনী।

মারকূটে ওপেনার জস বাটলারের সাথে ইনিংস ওপেন করটে নামেন জসস্বী জসোয়াল। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় জসস্বীকে। ১১ রান করে আউট হয়ে হয়ে যান তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে টি-২০ ক্রিকেটের অনয়তম সেরা ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ডের জস বাটলার দেবদূত পাডিকালের সাথে বড় একটি পার্টনারশীপ গড়ে তোলেন। ৩৫ বলে এই জুটি গড়েন ৭৭ রানের ইনিংস।

বাটলার ৩৬ বলে করেন ৫২ রান। একটি চার ও তিনটি ছয় ছিল তার ইনিংসে। পাডিকাল ২৬ বলে করেন ৩৮ রান। পাঁচটি চারের মার ছিল তার ইনিংসে।

পাডিকাল আউট হবার এক বল পরে ডাক মারেন অধিনায়ক সন্জু স্যামসন। তবে রবিচন্দ্র অশ্বিন উইকেটে এসেই ২২ বলে ২টি ছয় ও একটি চার সহকারে ৩০ রান করেন। দলীয় ১৪২ রানে ফিরে যান বাটলার। তবে শিমরন হেটমায়ার ১৮ বলে ৩০ রানের আরেকটি ক্যামিও উপহার দিলে রাজস্থানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৫ রানের। শিমরণ দুটি করে চার ও ছক্কা মারেন।

১৭৬ রানের টার্গেট খুব একটা কঠিন নয় আজকালের টি-২০ ম্যাচে। চেন্নাই তাদের টার্গেট চজ করতে নেমে ১০ রানের মাথায় হারায় গায়কোয়াড়কে। ব্যক্তিগত ৮ রানে ফিরেন তিনি। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আজিংকা রাহানে আর ডেভন কনওয়ে ম্যাচে এগিয়ে নেন চেন্নাইকে টার্গেট অনুযায়ী। ১৯ বলে ২ চার ও এক ছয়ে রাহানে আউট হয়ে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে চেন্নাই।

একে একে এক ডিজিটের স্কোরে ফিরে যান শিবাম দুবে, মইন আলী এবং আম্বাতী রাইড়ু। এক পর্যায়ে ৩৮ বলে ৫০ রান করে ফিরে যান ওপেনার ডেভন কনওয়ে।

উইকেটে দুই নতুন ব্যাটার রবীন্দ্র জাদেজা আর মহেন্দ্র সিং ধোনী। টার্গেট ৩০ বলে ৬৩ রান। অতীতে এরকম টার্গেট অনেকবারই পেরিয়েছেন ধোনী সাবলীলভাবে। সুতরাং ঘাবড়ে যাবার কিছু ছিল না।

সাম্প্রতিক সময়ে অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা আছেন ভাল ফর্মে। ম্যাচেও তার ছাপ রাখলেন অনেকটা। ১৫ বলে করেছেন অপরাজিত ২৫ রান। ২টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন জাদেজা।

আরও পড়ুন: মুশফিকুর রহিম অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এক ক্রিকেটার

ধোনীও কম করেননি। চাপের মাথায় ১৭ বলে করেছেন ২৫ রান। কঠিন পরিস্থিতিতে মেরেছেন ৩টি ছক্কা। বিশেষ করে শেষ ওভারে যখন টার্গেট ছিল ২১ রান। সন্দীপ শর্মা প্রথম দুই বলেই দুটি ওয়াইড দিলেন। প্রথম লিগ্যাল ডেলিভারিতে অবশ্য ডট দেন।

শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে সন্দীপকে একটি বিশাল ছক্কা হাঁকান ধোনী। তৃতীয় বলকেও ওভার বাউন্ডারি মেরে দলের টার্গেট নামিয়ে আনেন ৩ বলে ৭ রানের দূরত্বে। এখান থেকে চেন্নাইয়ের জয় ছিল হাতের নাগালে!

কিন্তু রাজস্থানের বোলার পরের তিনটি বল করলেন দারুণ বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে। সেই তিন বলের দুটি থেকে ধোনী নিতে পেরেছেন দুই রান। জাদেজা নিয়েছেন একরান। শেষ তিন বল থেকে কোন বাউন্ডারি নিতে না পারায় ম্যাচটিতে পরাজয় বরণ করে নিতে হয় চেন্নাই সুপার কিংসকে।

নিজের ২০০তম ম্যাচ অধিনায়ক হিসাবে তাই রাঙাতে পারেননি মহিন্দ্র সিং ধোনী। ক্রিজে দাঁড়িয়ে পরাজয়ের সাথে আলিঙ্গন করেছেন আশাহত হয়ে।

Related posts

Leave a Comment