ভাল খেলেও হার বাংলাদেশের! স্বপ্নেরমত একটি সেট আপ পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয়স্কোর ১৭১। বোলাররা রীতিমতফর্মে। ধারাভাষ্যকাররা মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন এটা ভাল সংগ্রহ।সাম্প্রতিক শ্রীলংকান ব্যাটারদের ফর্ম বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশের খুবই ভাল সম্ভাবনা ছিল ম্যাচ জেতার।
কিন্তু দিনের দ্বিতীয় পর্বে অনেক চমক অপেক্ষা করছিল। ব্যাটিং করতে নেমে শ্রীলংকান ব্যাটাররাও ঘুরে দাঁড়ান। যদিও প্রথম ওভারেই শ্রীলংকান সেরা ব্যাটার কুশল পেরেরাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নাসুম। কিন্তু অপরপ্রান্তের ওপেনার পাথাম নিশাংকা এবং ওয়ানডাউনে খেলতেনামা চারিথ আশালাংকা পাল্টা আক্রমনে ঘুরিয়ে দেন খেলার মোড়। কপালে জুটে ভাল খেলেও হার।
দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের পার্টনারশীপ গড়ে শ্রীলংকান দলের ভিত গড়ে দেন। একই সাথে বাংলাদেশের হাত থেকে চলে যায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রন। প্রচন্ড চাপের মুখেও তারা ছিলেন লড়াকু। তবে পাথাম আউট হওয়ার পর ম্যাচে ফিরে এসেছিল বাংলাদেশ।
সাকিব একই ওভারে তুলে নেন পাথাম এবং আভিসকা ফার্নান্দোকে। দুজনই ক্লিন বোল্ড। পরের ওভারে সাইফুদ্দিন তুলে নেন হাসারাঙ্গাকে। ম্যাচে তখন ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
কিন্তু উইকেট নেয়া সত্বেও সাকিবকে বোলিং থেকে প্রত্যাহার করে নেন মাহমুদুল্লাহ। এই পর্যায়ে দরকার ছিল সাকিবকে দিয়ে আরেকটি ওভার বল করানো। সাকিব যদি তাতে উইকেট না পেতেন তবুও সমস্যা ছিলনা। রান আটকে রাখতে পারতেন। শেষ পর্যন্ত সাকিবের ৪ ওভারের কোটাও পুরন করেননি মাহমুদুল্লাহ। মুস্তাফিজের এক ওভারও বাকি ছিল।
লিটন দাশ দুটি ক্যাচ ড্রপ করেছেন। এই ক্ষতি পুরণ করা আর সম্ভব হয়নি কারো পক্ষে। তবে এই খেলায় মাহমুদুল্লার দুর্বল অধিনায়কত্ব প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। এজন্যই মিলে ভাল খেলেও হার।
শ্রীলংকান ব্যাটাররা চড়াও হয়েছেন মুলত আফিফ (১২তম), মাহমুদুল্লাহর দ্বিতীয় ওভার (১৪ তম) এবং সাইফুদ্দিনের করা ম্যাচের ১৬তম ওভারে। এই তিন ওভারের ১৮ বলে লংকান ব্যাটাররা নেন (১৫,১৬ ও ২২) মোট ৫৩ রান। মাঝখানে ১৫ তম ওভারে মুস্তাফিজ দেন মাত্র ৫ রান। ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আসালাংকার ক্যাচটিও এই ওভারে মিস করেন লিটন দাশ। এর আগে আফিফের বলে মিস করেন রাজাপক্ষের ক্যাচ। ম্যাচের সারমর্ম মোটামুটি এখানেই শেষ। সান্তনা শুধুই ভাল খেলেও হার!
তবেশুরুতে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল একটি পরিকল্পনারসুন্দর বাস্তবায়ন। দুই ওপেনার রানপেয়েছেন শুরুতে। পাওয়ারপ্লে শেষ হবার একবলআগে ওপেনার লিটন দাশ আউটহন ১৬ রান সমানসংখ্যক বল খেলে। সাকিব৭ বলের আত্মবিশ্বাসী একইনিংসে ২টি চারসহ করেন১০ রান।
এরপর মুশফিকুর রহিম ওপেনার নাইম হাসানকে নিয়ে অনেকদিন পর বাংলাদেশকে একটি ভাল পার্টনারশীপ উপহার দেন। মোহাম্মদ নাইমছিলেন অনেকটা অ্যংকর এর ভূমিকায়। ৫২বলে ৬২ রান করেন৬টি চারসহকারে। তবে মুশফিক শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৭ রানে। বলখেলেছেন ৩৭টি। ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে দুটি ছক্কাইএসেছে মুশফিকের ব্যাট থেকে। চার মেরেছেন ৫টি।
আরও পড়ুন:টি-২০ বিশ্বকাপ: সুপার লীগে ভাল করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশ!
রানহয়তো আরেকটু বেশি হতে পারত ব্যাটং অর্ডারে পরিবর্তন না আনলে। নাইম আউট হবার পর নামেন আফিফ। অথচ সেসময় ইনফর্ম মাহমুদুল্লাহ নামাটা উচিত ছিল। সাধারনত এই পজিশনেই ব্যাট করেন মাহমুদউল্লাহ।
একটিচারসহ আফিফ করেছেন ছয়বলে সাত। কিন্তু পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী এই ৬ বলে হওয়া উচিত ছিল কমপক্ষে ১৫ রান। মাহমুদউল্লাহ ৫বল খেলে করেছেন ১০ রান। এই সব ছোটখাটবিষয় গুলোতে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের আরও যত্নবান হওয়া দরকার। না হলে এভাবেই মিলবে ভাল খেলেও হার!
বাউন্ডারী লাইনে দুটি সহজ ক্যাচ মিস, সাকিব ও মুস্তাফিজকে দিয়ে চার ওভার বল না করানো এবং দুর্বল অধিনায়কত্ব এই তিন কারনকেই বাংলাদেশের পরাজয়ের জন্য দায়ী করা যায়। তবে শ্রীলংকা ভাল খেলেই জিতেছে এই কথাটি বললেই মনে হয় পুরো খেলার সঠিক মূল্যায়ন করা হয়। ভাল খেলেও হার মেনেছে বাংলাদেশ।